মেহরিন চৌধুরীকে ঘিরে ডিপফেক প্রচারণা: এআই দিয়ে তৈরি ভূয়া ভিডিও ভাইরাল
উক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়া এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো একটি ডিপফেক ভিডিও। এটি স্পর্শকাতর ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করার অপচেষ্টা।
ফ্যাক্টচেক
এম আখতার মুকুল
7/24/20251 মিনিট পড়ুন


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়, মাইলস্টোন কলেজে অগ্নিকাণ্ডের সময় ২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে মেহরিন চৌধুরী নামে এক শিক্ষিকা দগ্ধ হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিও বার্তায় তাকে বলতে শোনা যায়:
"আমি মেহরিন চৌধুরী, আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যদি আপনাদের সন্তানদের কিছু হয়, তবে আপনাদের আমাদের উপর দিয়ে যেতে হবে। আপনাদের সন্তানদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। বিপদে-আপদে তাদের পাশে সবসময় থাকবো।"
বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্ট একাধিক ফেসবুক আইডি ও পেইজ থেকে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। লিংক এখানে(লিংক এক, দুই)
বাস্তবতাঃ
চেক পয়েন্ট-এর অনুসন্ধানে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি করা ডিপফেক ভিডিও। ঘটনাটি নিয়ে আবেগকে পুঁজি করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই ভিডিওটি ভাইরাল করা হয়েছে।
চেক পয়েন্ট, MIT Media Lab এবং First Draft’s Information Disorder Framework অনুসরণ করে ভিডিওটির কারিগরি ও ভাষাগত বিশ্লেষণ চালায়। এতে যে বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া গেছে:
ভিডিওটিতে মেহরিন চৌধুরীর নামে যে কণ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছে, তা তার প্রকৃত বাচনভঙ্গি, উচ্চারণ ও ভাষার ধরণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ভিডিওটিতে দুটি ভিন্নধর্মী কণ্ঠস্বর শোনা যায়, যা এটিকে একটি মিশ্রিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ এআই ভিডিও হিসেবে স্পষ্ট করে।
ভিডিওতে মেহরিনের মুখাবয়ব, ঠোঁটের নড়াচড়া ও শরীরী ভাষা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ভিডিওটি গুগলের জেমিনি (Gemini) নামক একটি এআই টুল ব্যবহার করে তৈরি করা দুটি ৮-সেকেন্ডের ক্লিপ জুড়ে তৈরি করা হয়েছে।
তুলনামূলক বিশ্লেষণঃ
চেক পয়েন্ট মেহরিন চৌধুরীর জীবিত অবস্থায় একটি অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তৃতার একটি সত্যিকারের ভিডিও বিশ্লেষণ করে। সেখানে তার প্রকৃত কণ্ঠ, বাচনভঙ্গি এবং অঙ্গভঙ্গি স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যা ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সঙ্গে তুলনা করলে স্পষ্ট পার্থক্য ধরা পড়ে।
সুতরাং,উক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়া এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো একটি ডিপফেক ভিডিও। এটি স্পর্শকাতর ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করার অপচেষ্টা।এটি একটি স্পষ্ট তথ্য বিকৃতি। এমন বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট থেকে সতর্ক থাকা এবং যাচাই-বাছাই করে তথ্য গ্রহণ করাই বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
